দাদ বা রিংওয়ার্ম (Ringworm) হলো এক সাধারণ ছত্রাকজনিত ত্বকের
সংক্রমণ, যা বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বেই প্রচলিত।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) -এর তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী
প্রতি বছর প্রায় ৯০০ মিলিয়নের বেশি মানুষ ছত্রাকজনিত ত্বকের
সংক্রমণে আক্রান্ত হন। বাংলাদেশে গরম ও আর্দ্র আবহাওয়ার কারণে দাদের
প্রকোপ তুলনামূলক বেশি, বিশেষ করে শিশু, কিশোর এবং যারা নিয়মিত বাইরে
কাজ করেন তাদের মধ্যে এই সংক্রমণ দেখা যায়।
এটি মূলত ত্বকের উপরের স্তরে ছত্রাকের বৃদ্ধি থেকে হয়, যা চুলকানি,
লালচে দাগ ও খসখসে ত্বক সৃষ্টি করে। দাদ নিরাময়ের জন্য
আক্রান্ত স্থান পরিষ্কার রাখা, অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ ব্যবহার
এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা সবচেয়ে কার্যকর উপায়। নিজের
ব্যবহারের তোয়ালে, কাপড় ও বিছানা আলাদা রাখা এবং নিয়মিত শুকনো রাখা
সংক্রমণ রোধে সাহায্য করে।
দাদ বা দাউদ (Ringworm) হলো এক ধরনের ছত্রাকজনিত চর্মরোগ, যার
মূল কারণ হলো ফাঙ্গাল ইনফেকশন। নামের সঙ্গে “worm” থাকলেও এটি কোনো
কৃমি নয়—বরং ত্বকের ওপর ফাঙ্গাসের সংক্রমণ।
এই রোগে ত্বকে সাধারণত বৃত্তাকারে লালচে দাগ দেখা যায়, যার চারপাশে
চুলকানি ও জ্বালাপোড়া অনুভূত হয়। দাদের কেন্দ্র অংশ সাধারণত
তুলনামূলক ফ্যাকাশে থাকে এবং চারপাশের দাগ ঘন লালচে রঙের হয়, যেটা
দেখতে আংটির মতো লাগে।
দাদ কেন হয়? দাউদ এর প্রধান কারণ
দাদ মূলত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাব,
ঘাম ও ফাঙ্গাল সংক্রমণের কারণে হয়। তবে যাদের ত্বক দীর্ঘ সময়
ভেজা থাকে বা ইমিউনিটি দুর্বল, তাদের মধ্যে এটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
নিম্নে দাদের সাধারণ কারণগুলো বিস্তারিতভাবে দেওয়া হলো;
অতিরিক্ত ঘাম ও আর্দ্রতা: বাংলাদেশের গরম ও আর্দ্র আবহাওয়ায়
অনেকের শরীরে ঘাম জমে থাকে। এই আর্দ্র পরিবেশে ফাঙ্গাস সহজেই বৃদ্ধি
পায় এবং দাদ তৈরি করে।
অপরিষ্কার পোশাক বা তোয়ালে ব্যবহার: ঘামভেজা বা ধোয়া না
হওয়া কাপড়, তোয়ালে বা চাদর ব্যবহার করলে ফাঙ্গাস সেখানে জন্ম
নিয়ে ত্বকে ছড়াতে পারে।
অন্যের ব্যবহৃত জিনিস ব্যবহার: সংক্রমিত ব্যক্তির পোশাক,
চিরুনি, বালিশ, বা তোয়ালে ব্যবহার করলে দাদ সরাসরি ছড়িয়ে পড়ে।
দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা: যাদের শরীরের ইমিউন সিস্টেম
দুর্বল (যেমন ডায়াবেটিস রোগী বা দীর্ঘমেয়াদি ওষুধ গ্রহণকারী),
তাদের দাদ হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
ত্বকের আর্দ্র অংশে বাতাস না পৌঁছানো: বগল, কোমর, ঘাড় বা
উরুর ভাঁজের মতো স্থানে বাতাস কম যায়—এই স্থানগুলোতে দাদ বেশি হয়।
শিশু ও কিশোরদের মধ্যে সংক্রমণ: স্কুল, খেলার মাঠ বা হোস্টেলে
একসাথে থাকা ও জিনিস শেয়ার করার কারণে শিশুদের মধ্যে দাদ সহজে
ছড়ায়।
দাদের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে যেসব অভ্যাস
দাদ মূলত Trichophyton নামক এক ধরনের ফাঙ্গাসের কারণে হয়। তবে কিছু
সাধারণ কারণ এর ঝুঁকি বাড়ায়:
প্রতিদিন গোসল না করা
ভেজা পোশাক বা জুতা পরে থাকা
অন্যের তোয়ালে, পোশাক, বা বিছানা ব্যবহার করা
জিম, সুইমিং পুল বা ক্লাবে যাওয়া কিন্তু শরীর না শুকানো
চুলকানোর মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়ানো
দাদ এর সাধারণ লক্ষণ (Ringworm Symptoms)
দাদ একটি সাধারণ ছত্রাকজনিত ত্বকের সংক্রমণ। এটি শরীরের হাত, পা, ঘাড়,
কোমর, মাথা বা নখে যে কোনো অংশে হতে পারে। দাদের প্রাথমিক লক্ষণ অনেক
সময় অন্য ত্বকের সমস্যার মতো মনে হতে পারে। তাই নিচের উপসর্গগুলো জানা
জরুরি:
দাদ এর মূল লক্ষণ:
গোলাকার ফুসকুড়ি: সবচেয়ে স্বতন্ত্র লক্ষণ হলো ত্বকের উপর
লাল, বাদামী বা বেগুনি রঙের চাকার মতো ফুসকুড়ি দেখা দেওয়া। সাধারণত
এর কিনারা স্পষ্ট ও সামান্য উঁচু থাকে।
চুলকানি ও জ্বালা: আক্রান্ত স্থানে প্রচণ্ড চুলকানি, জ্বালা
বা পোড়ার অনুভূতি হয়।
উঁচু কিনারা ও পরিষ্কার কেন্দ্র: ফুসকুড়ির মাঝখানের অংশ
তুলনামূলকভাবে পরিষ্কার বা স্বাভাবিক, আর চারপাশটা উঁচু ও লালচে হয়।
শুকনো ও খসখসে ত্বক: আক্রান্ত জায়গার ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়,
কখনও আঁশ উঠে আসে বা ত্বক খসখসে লাগে। অনেক সময় মনে হয় যেন ত্বক
উঠছে।
ধীরে ধীরে আকার বৃদ্ধি: শুরুতে দাগ ছোট থাকে, কিন্তু কয়েক
দিনের মধ্যে চাকার মতো ছড়িয়ে যায়। এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায়ও যেতে
পারে যদি সাবধান না থাকা হয়।
ফোস্কা বা পুঁজ: কিছু ক্ষেত্রে জায়গাটা লালচে হয়ে ছোট ছোট
দানা দেখা যায়, কখনও পুঁজও হতে পারে। এসব সাধারণত বেশি ঘাম হলে দেখা
দেয়।
স্থানভেদে দাদ এর লক্ষণের ভিন্নতা:
মাথার ত্বকে (Tinea Capitis): চুল পড়তে শুরু করে, জায়গাটা
টাকের মতো দেখা যায়, এবং খুশকির মতো আঁশ উঠতে পারে।
নখে (Tinea Unguium): নখ পুরু, ভঙ্গুর ও বিবর্ণ হয়ে যায়।
এমনকি কখনও ভেতর থেকে ভেঙে যেতেও পারে।
পায়ের পাতায় (Athlete’s Foot / Tinea Pedis): পায়ের আঙুলের
ফাঁকে শুষ্কতা, ফাটা ও চুলকানি দেখা যায় এবং কখনও গন্ধও হতে পারে।
কোমর বা ঘাড়ে (Tinea Corporis): লালচে দাগের সঙ্গে চুলকানি ও
অস্বস্তি দেখা দেয়, বিশেষ করে ঘাম বা আঁটসাঁট পোশাকের নিচে।
এই লক্ষণগুলো দেখা দিলে দেরি না করে একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ
নিন।
দাউদ এর চিকিৎসা: দাদ থেকে মুক্তির সহজ উপায়
দাউদ বা দাদ থেকে মুক্তি পেতে ত্বক পরিষ্কার ও শুকনো রাখা সবচেয়ে
জরুরি। প্রতিদিন গোসলের পর অ্যান্টিফাঙ্গাল ক্রিম ব্যবহার করুন এবং
চিকিৎসকের নির্দেশমতো পুরো কোর্স শেষ করুন। নিম্নে দাদ থেকে মুক্তির
সহজ কিছু উপায় তুলে ধরা হলো;
১. দাউদের সবচেয়ে ভালো মলম / অ্যান্টিফাঙ্গাল ক্রিম
দাদের প্রাথমিক অবস্থায় সাধারণত বাহ্যিক অ্যান্টিফাঙ্গাল ক্রিমেই ভালো
ফল পাওয়া যায়।
Clotrimazole, Miconazole, Terbinafine বা Ketoconazole
জাতীয় মলম দিনে ২ বার আক্রান্ত স্থানে লাগাতে হয়। মলম লাগানোর আগে
জায়গাটা পরিষ্কার করে শুকিয়ে নেওয়া জরুরি।
নিয়মিত ব্যবহারে ২–৩ সপ্তাহের মধ্যে দাগ হালকা হয়ে যায়। একবার দাগ
মিলিয়ে গেলেও অন্তত আরও ১ সপ্তাহ ব্যবহার চালিয়ে যাওয়া উচিত, যাতে
ছত্রাক পুরোপুরি নষ্ট হয়।
২. দাউদের সবচেয়ে ভালো ঔষধ / ওরাল অ্যান্টিফাঙ্গাল ট্যাবলেট
যদি সংক্রমণ বড় এলাকায় ছড়ায়, পুরাতন হয়, বা বারবার ফিরে আসে—তাহলে শুধু
ক্রিমে কাজ নাও হতে পারে। এই ক্ষেত্রে চিকিৎসক মুখে খাওয়ার
অ্যান্টিফাঙ্গাল ট্যাবলেট দেন, যেমন:
Itraconazole, Fluconazole বা Terbinafine tablet।
এই ঔষধগুলো শরীরের ভেতর থেকে ফাঙ্গাস ধ্বংস করে, ফলে দাদ দ্রুত সারতে
সাহায্য করে।
তবে নিজের ইচ্ছায় না খেয়ে ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ অনুযায়ী ডোজ ও
সময় মেনে চলাই নিরাপদ ।
এই ঔষধগুলো কেবল ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ অনুযায়ী গ্রহণ করা
উচিত।
৩. মেডিকেটেড শ্যাম্পু (মাথার দাদ হলে)
যদি মাথায় দাদ হয় (Tinea capitis), তাহলে শুধু ক্রিম যথেষ্ট নয়। এই
ক্ষেত্রে Ketoconazole বা Selenium sulfide যুক্ত
মেডিকেটেড শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হয়।
শ্যাম্পুটি সপ্তাহে ২–৩ দিন করে ব্যবহার করলে ছত্রাক কমে আসে ও খুশকি
ধরনের আঁশও দূর হয়। শ্যাম্পু লাগিয়ে ৫ মিনিট অপেক্ষা করে ধোয়া ভালো,
এতে কার্যকারিতা বাড়ে।
৪. দাউদের স্থায়ী চিকিৎসা
দাদ সম্পূর্ণ সারাতে কিছু নিয়ম মেনে চলা জরুরি:
প্রতিদিন গোসল করুন এবং ত্বক শুকনো রাখুন
নিজের তোয়ালে, পোশাক ও চিরুনি ব্যবহার করুন
আক্রান্ত স্থান স্পর্শ করার পর হাত ধুয়ে ফেলুন
চিকিৎসকের দেওয়া ওষুধ বা ক্রিম নির্ধারিত সময় পর্যন্ত ব্যবহার করুন
ঘাম জমে এমন পোশাক এড়িয়ে চলুন
৫. পুরাতন দাদ এর চিকিৎসা
পুরাতন বা দীর্ঘদিনের দাদ অনেক সময় সাধারণ ক্রিমে ভালো হয় না। পুরাতন
বা বারবার হওয়া দাদ হলে ডা. সিরাজ উদ্দিন (ডার্মাটোলজিস্ট ও চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ) এর পরামর্শ নেওয়া সবচেয়ে নিরাপদ উপায়। এ ক্ষেত্রে নিচের চিকিৎসা
দরকার হতে পারে:
দীর্ঘমেয়াদি অ্যান্টিফাঙ্গাল ট্যাবলেট কোর্স
ঔষধযুক্ত বডি ওয়াশ / Medicated body wash (Ketoconazole wash)
নিয়মিত ত্বক পরিষ্কার ও শুকনো রাখা
অ্যান্টিসেপটিক পাউডার ব্যবহার
পরামর্শ: দাদের চিকিৎসায় ধৈর্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত
ক্রিম লাগানো, পরিষ্কার থাকা, এবং পুরো কোর্স শেষ করা এই তিনটি অভ্যাসই
পুরাতন দাদ থেকে স্থায়ী মুক্তি দেয়।
৬. দাদ থেকে মুক্তির প্রাকৃতিক উপায়
হালকা সংক্রমণের ক্ষেত্রে কিছু ঘরোয়া উপায় দাদ কমাতে সহায়তা করে। তবে
মনে রাখবেন, এই উপায়গুলো চিকিৎসার বিকল্প নয়, বরং সহায়ক মাত্র।
রসুন: রসুনে থাকা অ্যালিসিন ছত্রাক ধ্বংস করতে সাহায্য করে।
কয়েকটি রসুন বেটে পাতলা করে আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে ১৫–২০ মিনিট পর
ধুয়ে ফেলুন।
লেবু ও নারকেল তেল: লেবুর রসের অ্যান্টিফাঙ্গাল গুণ ছত্রাক
নষ্ট করে, আর নারকেল তেল ত্বক কোমল রাখে। দুইটি মিশিয়ে দিনে ১–২ বার
লাগাতে পারেন।
অ্যালোভেরা জেল: অ্যালোভেরা জেলে ঠান্ডা প্রভাব ও জীবাণুনাশক
গুণ আছে। আক্রান্ত স্থানে লাগালে জ্বালা ও চুলকানি কমে যায়।
ভিনেগার: ভিনেগার ছত্রাকের বৃদ্ধিকে বাধা দেয়। এক চামচ
ভিনেগার এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে তুলা দিয়ে আক্রান্ত স্থানে লাগাতে
পারেন।
সূর্যের আলো: প্রতিদিন কিছুক্ষণ সূর্যের আলোতে আক্রান্ত জায়গা
শুকিয়ে নিন। এতে ত্বক শুষ্ক থাকে এবং ছত্রাকের বৃদ্ধি কমে।
৭. দাদ রোগ প্রতিরোধে করণীয়
দাউদ বা দাদ সম্পূর্ণভাবে ভালো করার জন্য প্রথমে সংক্রমণের উৎস চিহ্নিত
করা জরুরি। সাধারণত সঠিক পরিচ্ছন্নতা ও নিয়মিত চিকিৎসা নিলে দাউদ
২–৪ সপ্তাহের মধ্যে সেরে যায়। দাউদ রোগ প্রতিরোধের জন্য কিছু
করণীয়ঃ
প্রতিদিন গোসল করে শরীর ভালোভাবে শুকিয়ে নিন।
নিজের তোয়ালে ও পোশাক আলাদা ব্যবহার করুন।
তুলার কাপড় পরুন, ঘাম জমে এমন পোশাক এড়িয়ে চলুন।
নিয়মিত পোশাক ও বিছানার চাদর ধুয়ে রোদে শুকান।
পোষা প্রাণীর ত্বকে দাগ দেখলে দ্রুত চিকিৎসা নিন।
স্টেরয়েডযুক্ত ক্রিম নিজে থেকে ব্যবহার করবেন না।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও শুকনো পরিবেশে থাকার চেষ্টা করুন।
কখন ডাক্তার দেখাবেন?
দাদ সাধারণত হালকা অবস্থায় নিজে থেকেই বা
অ্যান্টিফাঙ্গাল ক্রিমে সেরে যায়। কিন্তু নিচের পরিস্থিতিগুলোর
যেকোনোটি হলে দেরি না করে দ্রুত একজন
চর্ম রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন;
দুই সপ্তাহ ধরে চিকিৎসা নেওয়ার পরও উন্নতি না হলে
দাদ শরীরের একাধিক জায়গায় ছড়িয়ে পড়লে
ত্বকে ফোস্কা, ঘা বা পুঁজ দেখা দিলে
প্রচণ্ড চুলকানি বা জ্বালা বাড়তে থাকলে
শিশু, বয়স্ক বা ডায়াবেটিস রোগীর ত্বকে দাদ দেখা দিলে
মাথার দাদ বা নখে সংক্রমণ দেখা গেলে
দাদ হলে কি খাওয়া নিষেধ?
দাদ থাকলে কিছু খাবার এড়িয়ে চলা জরুরি, কারণ এগুলো ফাঙ্গাস বৃদ্ধিতে
সহায়তা করে।
অতিরিক্ত মিষ্টি বা চিনি যুক্ত খাবার
ভাজাপোড়া ও তৈলাক্ত খাবার
দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার (কিছু ক্ষেত্রে সংক্রমণ বাড়ায়)
ঠান্ডা পানীয় ও প্রক্রিয়াজাত খাবার
এর পরিবর্তে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে শাকসবজি, ফল, পানি ও
প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত।
দাদ এর চিকিৎসায় চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সিরাজ উদ্দিন এর পরামর্শ নিন
দাদ বা দাউদ বারবার হলে বা ছড়িয়ে পড়লে নিজে থেকে ওষুধ ব্যবহার না করে
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা
নেওয়াই সবচেয়ে নিরাপদ উপায়। দাদ এর চিকিৎসায় অভিজ্ঞ চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ
ডা. সিরাজ উদ্দিন এর পরামর্শ নিন। বাংলাদেশে তিনি
২৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিভিন্ন ত্বকের সমস্যা যেমন
দাদ, একজিমা ও ফাঙ্গাল সংক্রমণ নিয়ে সফলভাবে কাজ করছেন।
রোগীর প্রয়োজন অনুযায়ী তিনি নিরাপদ, আধুনিক ও কার্যকর চিকিৎসা প্রদান
করেন। সঠিক সময়ে চিকিৎসা নিলে দাদ সম্পূর্ণভাবে সারানো সম্ভব এবং
পুনরায় হওয়ার ঝুঁকিও কমে। দাদ বা অন্যান্য ত্বকের সমস্যায় দ্রুত
চিকিৎসা পেতে এখনই ডা. সিরাজ উদ্দিন এর সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
দাদের প্রাথমিক চিকিৎসায় সাধারণত Clotrimazole, Miconazole বা
Terbinafine ক্রিম ভালো কাজ করে। দিনে দুইবার আক্রান্ত স্থানে
লাগাতে হয়। জায়গা পরিষ্কার ও শুকনো রাখা জরুরি।
দাদ রোগের কিছু ঘরোয়া চিকিৎসা কী কী?
হালকা সংক্রমণে দাদ কমাতে ঘরোয়া উপায় হিসেবে টি ট্রি অয়েল
(Tea Tree Oil), নিমপাতার পেস্ট, বা রসুনের রস ব্যবহার করা যায়।
তবে ত্বকে জ্বালা বা অ্যালার্জি থাকলে ডাক্তারকে দেখান।
দাদ হলে কি সাবান ব্যবহার করা যায়?
হ্যাঁ, তবে মাইল্ড বা অ্যান্টিফাঙ্গাল সাবান ব্যবহার করা ভালো।
কঠিন বা সুগন্ধি সাবান ত্বক শুষ্ক করে দিতে পারে, যা চুলকানি
বাড়ায়।
গরম পানি খেলে কি দাদ কমে?
না, গরম পানি খাওয়া বা পান করা দাদ সারায় না। বরং আক্রান্ত
স্থানে হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে ধোয়া ত্বক পরিষ্কার রাখতে
সাহায্য করে।
দাদে কী লাগালে ভালো হবে?
অ্যান্টিফাঙ্গাল ক্রিম যেমন Clotrimazole, Ketoconazole বা
Terbinafine লাগালে ভালো হয়। আক্রান্ত জায়গায় নিয়মিত ২ বার
ব্যবহার করতে হবে।
দাউদ একজিমা কেন হয়?
দাউদ বা দাদ একজিমা নয়, এটি একটি ফাঙ্গাল ইনফেকশন। তবে দীর্ঘদিন
দাদ থাকলে ত্বক খসখসে হয়ে একজিমার মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
দাদ কি ছোঁয়াচে রোগ?
হ্যাঁ, দাদ খুব সহজে ছড়ায়। আক্রান্ত ব্যক্তির তোয়ালে, জামা,
বিছানা বা চামড়ার সংস্পর্শে এলে অন্যেরও সংক্রমণ হতে পারে।
দাদ সারতে কতদিন লাগে?
প্রাথমিক দাদ সাধারণত ২–৪ সপ্তাহে সেরে যায়। পুরাতন বা বিস্তৃত
দাদ হলে ৬–৮ সপ্তাহ পর্যন্ত চিকিৎসা নিতে হয়।
দাদ হলে কী খাওয়া উচিত নয়?
চিনি, দুধজাত খাবার, ও ভাজাপোড়া এড়িয়ে চলা ভালো। ফলমূল, সবজি ও
হালকা প্রোটিন খেলে ত্বক দ্রুত ভালো হয়।
দাদ পুরোপুরি সারানো যায় কি?
হ্যাঁ, দাদ সম্পূর্ণভাবে নিরাময়যোগ্য। সঠিক চিকিৎসা,
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও নিয়মিত ওষুধ ব্যবহারে দাউদের স্থায়ী
সমাধান সম্ভব।